Tributes
আমার মানসপটে প্রফেসর ড. মজিবর রহমান বিশ্বাস স্যার
By Dr. Md. Saidur Rahman (ড. মোঃ সাইদুর রহমান)
This article is written in Bangla. Dr. Rahman initially wrote this piece as Facebook post after the passing of Dr. M. R. Biswas in July, 2020. This article includes some comments from Facebook users/friends of Dr. Rahman.
প্রফেসর ড. মজিবর রহমান বিশ্বাস স্যার ছিলেন ব্যতিক্রমী একজন প্রফেসর। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার দেখা শ্রদ্ধেয় প্রফেসর মোনাওয়ার আহমাদ স্যার, মুহাম্মদ হোসেন স্যার, আবু আহমেদ আব্দুল মুহ্সী স্যার, আব্দুল হক স্যার, মোঃ লুৎফর রহমান স্যার, আব্দুল জলিল সরকার স্যার, মোঃ আসাদুর রহমান স্যার, মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম স্যার, এ এম মুয়াজ্জেম হুসেইন স্যার, এম. লুৎফর রহমান স্যার, মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান স্যার, মোঃ জয়নুল আবেদিন খান স্যার, সৈয়দ মঞ্জুর মুর্শেদ স্যার, ইসমাইল হোসেন স্যার, এস এম বুল বুল স্যারসহ আরো অনেক স্যারদের প্রত্যেকেরই বিশেষ বিশেষ কারণে বিশেষ ধরণের খ্যাতি আছে। মজিবর রহমান বিশ্বাস স্যার এবং সৈয়দ মঞ্জুর মোর্শেদ স্যারের গাম্ভির্যের খ্যাতির ধরণটা অন্যরকম ছিল যা ঐ সময়ের লোকজন অবশ্যই মনে রাখবেন বলে আমার বিশ্বাস। আমার কেন যেন মনে হয় মানুষের গাম্ভির্যের সাথে শারীরিক আকারের একটি ইতিবাচক সম্পর্ক আছে।
কাপড়-চোপড়ের প্রতি বিশ্বাস স্যারের বিশেষ কোন দৃষ্টি ছিল না। একই পোষাক বার বার পরতে পছন্দ করতেন। শুনেছি স্যারের সহধর্মিনী জোর করে স্যারকে নিয়ে দর্জির দোকানে যেতেন এবং এক সাথে ১০-১২ টি করে দুই পকেট ওয়ালা ফোতুয়া অর্ডার দিতেন যা স্যারের অত্যন্ত প্রিয় ছিল। একই ধরণের পোষাক পরা স্যারের একটি বৈশিষ্ট্য ছিল। আজকের দিনে বিভিন্ন পেশায় অনেক নামকরা ব্যক্তিরা একই ধরণের পোষাক পরার ক্ষেত্রে অনেক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা খুঁজে পেয়েছেন যা তিনি ঐ সময় অবলীলায় করতেন। কালো একটা চশমা স্যারের চোখে বা হাতে সব সময় দেখা যেত। আমি স্যারকে বেশ বয়স্ক অবস্থায় পেয়েছিলাম আর সেকারণেই হয়তো স্যারকে প্রায়ই অন্যমনস্ক দেখতাম।
স্যারের প্রাইভেটাইজেশন অব মাইনর ইরিগেশন প্রকল্পে ডাটা এন্ট্রির কাজ করার সুযোগ আমার হয়েছিল। আর এ সুযোগটা করে দিয়েছিলেন আমার অনুসরনীয় ব্যক্তিত্ব বর্তমান ইমেরিটাস প্রফেসর ড. এম. এ. সাত্তার মন্ডল স্যার। ছাত্রজীবনে অর্থসংকট ছিল বলে স্যার আমাকে ডাটা এন্ট্রির কাজে নিয়োজিত করেছিলেন। অপরাহ্ণের ক্লাস শেষ হলেই চলে যেতাম ডাটা এন্ট্রির কাজে যা চলতো রাত ৯ টা পর্যন্ত। শ্রদ্ধেয় প্রফেসর ড. এ. টি. এম. জিয়া উদ্দিন স্যার ডাটা এন্ট্রির কাজটি তদারকী করতেন। আর প্রফেসর ড. সুনীল চন্দ্র দত্ত স্যার ডাটা এনালাইসিস করতেন। ডস সিস্টেমে এন্ট্রি হোত বলে এন্টার দেবার পর একটি সুন্দর শব্দ হোত। কয়েকজনের কম্পিউটর থেকে একই শব্দ আসতো বলে ঐ শব্দের একটি আলাদা সুর কম্পিউটর কক্ষটিকে ভরে দিত। সেই নিয়মিত শব্দের মধ্যে হঠাৎ করে যখন স্যার ঢুকতেন, আমরা সবাই প্রায় ভয় পেতে যেতাম স্যারের বিশালাকৃতির চেহারা দেখে। আমাদের ভয়টা বোধহয় স্যার এনজয় করতেন। একটু সময় দাঁড়িয়ে থেকে বলতেন তোমাদের কাজ কেমন চলছে সাঈদ। স্যারের সাঈদ বলে উচ্চারণটা আজও আমাকে তাড়া করে ফেরে। অনেক সময়ই স্যার বাইরের বারান্দায় একটি চেয়ারে বসতেন আর মাঝে মধ্যে গলায় একটু কাশি টেনে বলে উঠতেন, সাঈদ আমার অফিস থেকে পেপারটা দাও তো। কি দারাজ গলা, ভনিতা বিহীন এক মানবের অস্বিস্ত! স্যার কখনো চুল আচরাতেন বলে মনে হয়নি আমার। তারপরও স্যারকে আমার ভীষণ ভালো লাগতো স্যারের চলাফেরার স্টাইল দেখে। অন্য সকল স্যারকে দেখতাম স্যারকে ভীষণ সম্মান করতেন এটাও আমাকে স্যারের প্রতি আরও শ্রদ্ধাশীল করতো।
সময় ঠিক মনে নেই সম্ভবতঃ ১৯৯৩ সালের দিকে হবে, ক্রপডাইভার্সিফিকেশনে স্যারের একটি বড় প্রকল্পে সার্কভূক্ত দেশের পার্টনাররা বাকৃবিতে এসেছিলেন। গেষ্ট হাউজে পানির ফোয়ারার চারদিকের জায়গা গুলোতে টেবিল দিয়ে খাবার সাজানো হয়েছিল এবং যা ছিল আমার জীবনের প্রথম বুফে সিস্টেমে দেখা খাবার খাওয়া পদ্ধতি। কেন জানিনা ঐ অনুষ্ঠানে বিদেশীরা (সম্ভবতঃ চীন, ভিয়েতনাম থেকে আসা) সবাই একটু কম লম্বা ছিলেন। অনুষ্ঠানের মাঝামাঝি সময়ে স্যার যখন বারান্দা দিয়ে ঢুকলেন, বিদেশীরা সবাই স্যারকে দেখে এগিয়ে গেলেন। স্যার সবার চেয়ে এতই লম্বা এবং মোটাসোটা যে, তখন আমার মনে হয়েছিল এ যেন হ্যামিলিওনের বাশিঁওয়ালার পদার্পন হলো। সাত্তার মন্ডল স্যার এবং সুনীল স্যাররা অুনষ্ঠান ও খাবার তদারকির দায়িত্বে ছিলেন। শুধু অনেক বললে ভুল হবে, ঢাকার বাবুর্চী দিয়ে হরেক রকমের রান্নার আইটেম তৈরি করা হয়েছিল যার মধ্যে ভেজিটেবলের আইটেমও ছিল অনেক বেশি। আমার মনে আছে ফুলকপি, গাজর ও মুলার কথা যা নাকি ঘিয়ে ভাজা হয়েছিল। মুলা ভাজা এতো স্বাদযুক্ত খাবার আইটেম হতে পারে তা আমার অনুমানের বাইরে। আমার ওয়াইফকে ঘি দিয়ে সেইভাবে মুলা ভাজা আইটেম তৈরি করার কথা বললেই বলে, থাক আমার আর ঘি নষ্ট করার দরকার নাই, ঘি এর অনেক দাম কিন্তু। মনে মনে বলি, ঐ মুলা ভাজা খেলে তুমি অন্য কিছু না কিনে শুধু ঘি কিনতা আর মুলা ভাজায় মনোনিবেশ করতা। ঐ অনুষ্ঠানে আমরা দশজন রোভার স্কাউট খাবার সার্ভ করার জন্য আমন্ত্রিত হয়েছিলাম। ঐ সময় রোভার স্কাউটরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভলেন্টারী সার্ভিস দিতো। আজও আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি যে, ঐ অনুষ্ঠানে যোগদানের মাধ্যমে বিদেশীদের সাথে স্যারদের ইরেজীতে কথা বলা দেখার পর আমার অবচেতন মন বার বার বলছিল, আমিও যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক হতে পারতাম!
প্রফেসর ডক্টর মজিবর রহমান বিশ্বাস স্যার আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং অন্তরের অন্তস্তল থেকে গভীর কৃতজ্ঞতা আমাকে একটি সুন্দর স্বপ্ন দেখানোর জন্য। আজ আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক কিন্তু নিয়তির বিধানে হারালাম আপনাকে। স্যারের শিক্ষা ও গবেষণায় অবদান বিশ্ববিদ্যালয় তথা জাতি চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ রাখবে এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস। আল্লাহ্ তা’আলা বিশ্বাস স্যারকে বেহেস্ত নসীব করুন কায়মনবাক্যে আমি এ কামনা করি। সবশেষে, ধৈর্য সহকারে লেখাটি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
মন্তব্যঃ
Rokeya Begum প্রফেসর ডঃ মুজিবুর রহমান স্যার কে মনে রাখবে না এমন কেউ আছে নাকি!!
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহ , যাদের নাম আপনি লিখেছেন সকলেই সনামধন্য এক একজন পরিচ্ছন্ন ও জ্ঞানী শিক্ষাবিদ ছিলেন।
বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা সমিতি ময়মনসিংহ এর মাধ্যমে এদের অনেকের সাথেই কথা বলা,ভাবের আদান-প্রদান, আদর্শিক চিন্তা চেতনা,দেশ ও জনগণের স্বার্থে কাজের কথা , এলাকার জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা ও কল্যাণ সাধনের উপায় নানাবিধ বিষয়ে আলোচনা করেছি। একসময় মনে হতো এতোসব গবেষক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক থাকতে কেন বাঙলার মানুষের কল্যাণ হবে না, কেন খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না, নিশ্চয় ই সম্ভব,। হয়েছে ও তাই।
আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ, কৃষি পণ্যের উৎপাদন ও বিপণন, মানুষের পুষ্টি উপাদান ডিম দুধ মাছ মাংস সবজি,ফল নতুন নতুন উৎপাদন প্রযুক্তির ব্যবহার করে স্বাধীন বাংলাদেশের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়েছে। এ সবই তো স্যার দের সাধনার ফল।
আমি মুজিবুর রহমান স্যার কে বিশেষ ভাবে জানতাম আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনই তার ভক্ত ছিলাম।
আজ আবার মনে করিয়ে দেয়ার জন্য সাইদ ভাই আপনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। মুজিবুর রহমান স্যার এর জন্য প্রার্থনা করি আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করেন।
আমীন। ভালো থাকুন নিরাপদে থাকুন সুস্থ থাকুন। নিরন্তর শুভকামনা ও অভিনন্দন।
বন্ধু তোমার কৃতজ্ঞতাবোধ মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ দেখে সত্যিই ভালো লাগলো জীবনে অনেক বড় হবে সে প্রত্যাশা এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করি।
আল্লাহ এব্যাক্তিত্ব শীল সম্মানিত স্যারকে জান্নাতবাসী করুন। আমিন।
Nice writing sir. In recent era, there is a tremendous shortage of professors like whom you mentioned including Prof Biswas sir. May Allah always keep then in peace.
সাইদুর বিশ্বাস স্যার কে নিয়ে তোমার স্মৃতিচারণটা অত্যন্ত গভীরভাবে পড়লাম। আমার মনে হল যে তুমি সেই পুরাতন দিনের স্মৃতি গুলোর মাঝে হারিয়ে গিয়েছিলে। আসলে স্যারের গাম্ভীর্য টাই ছিল অন্যরকম। উনার উদাহরন উনি নিজেই। এবং উনি যেটা বলতেন সেটা অত্যন্ত দৃঢ় কন্ঠে বলতেন। স্যারের শ্বশুরবাড়িতে ছিল চিটাগাং ।আমি চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় ভাইস-চ্যান্সেলর থাকাকালীন সময়ে ভাবিকে নিয়ে হঠাৎ একদিন বেড়াতে গিয়েছিলেন। অনেকক্ষণ সময় দিয়েছিলেন। দুপুরের লাঞ্চ করে তারপরে ফিরেছিলেন।স্যারের অত্যন্ত দৃঢ় কন্ঠে কথাবার্তা গুলো শোনার জন্য অনেক সহকর্মী সেদিন সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন। স্যার ছিলেন একজন দৃঢ়চিত্তের মানুষ। আমার মতে উনি যা বলতেন তিনি তাই করতেন।স্যার মাঝে মাঝে কেওয়াটখালীর মোড়ে ইসমাইল হোমিও হলে এসে ওখানে লোকজনদেরকে নিয়ে বসে বিরাট এক মজমা জমাতেন। লোকজন স্যারের কথাগুলো শোনার জন্য চতুর্দিকে ভিড় করে বসতেন।
প্রফেসর সাইদুর রহমান, তোমার এ সুন্দর সাবলিল লেখাটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমাদের এসব মহান ও গুণী নীতিবান স্যারদের বিষয়ে এভাবে কিছু তথ্য প্রকাশ হলে আমার বিশ্বাস তা বর্তমান ঘুনে ধরা সমাজ পরিবর্তনে অনেকটা সহায়ক হবে, তাঁদের আদর্শকে মানুষ অনুসরণ করবে। তোমাকে আবারও ধন্যবাদ। চলো আমরা সব সময় দোয়া করি, মহান আল্লাহ যেন তাঁকেসহ আমাদের সকল শিক্ষাগুরুদেরকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসীব করেন।
স্যারের নাম অনেক শুনেছি কিন্তু
সামনাসামনি কখনো দেখিনি। অনেক সুন্দর স্মৃতিচারন। ভাল লাগল লিখাটি পড়ে।
অসাধারণ লেখায় মুগ্ধ অামি।
ডঃ মজিবর রহমান বিশ্বাস স্যারকে আপনার স্মৃতি চারণের মাধ্যমে জানতে পারলাম স্যার। আপনার খুব প্রাঞ্জল আর সাবলীল লেখার মাধ্যমে যেন আমিও মজিবর স্যারের অসীম ব্যক্তিত্বের একটা অবয়ব দেখতে পেলাম। ধন্যবাদ সুন্দর লেখনীর জন্য স্যার।
মনোমুগ্ধকর স্মৃতিচারণ।স্মৃতির পাতায় উল্লেখিত স্যারদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। আলোকিত স্যারদের সদাচারী ব্যক্তিত্ব আজও স্মৃতির পাতায় ঝলমল করছে।বিশ্বাস স্যারসহ যাঁরা আমাদের ছেড়ে চলে গোছেন তাঁদের মহান আল্লাহ সন্মানিত করুন আর যাঁরা বেঁচে আছেন তাদের নেক হায়াত দান করুন আমিন।
বাকৃবিতে আমার ছাত্র জীবন থেকে চাকুরী জীবন পর্যন্ত সময়ে(১৯৭০-২০০১) ড: মনজুর মোর্শেদ ও ড: বিশ্বাস , এই দুইজন স্যারকে
সবচেয়ে বেশী গাম্ভীরজপূরণ শিক্ষক হিসাবে মনে হতো, দুজনই পরপারে চলে গেলেন, পরপারে দুজনেরই আত্মার শান্তি কামনা করি।
I face Muzibor Rahman Biswas
Sir in PSC viva voice. I believe that l have got the job for the Sir. I very much grateful to Muzibor Rahman Biswas Sir & also grateful to my Thesis Supervisor Sir MR Munjur Morshed .
স্যার, খুবই সাবলীল লেখনী। এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেললাম। ধন্যবাদ আমাদেরকে বিশ্বাস স্যার এবং সেই সময়কার অভিজ্ঞতার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য।
চমৎকার লিখেছেন। আমিও স্যারের অনেক স্নেহ ভালোবাসা পেয়েছি। খুব মনে পরছে। আল্লাহ তায়ালা স্যার কে বেহেস্ত নসিব করুন। অামিন।
বিশ্বাস স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আপনার লেখাটা পড়ে মুগ্ধ হলাম। স্যারের সাথে আমারও সামান্য স্মৃতি প্রকাশ করার লোভ সংবরণ করতে পারলাম না।
১৯৯৪ সাল। তখন আমি বি. কে. বি. কলেজের বাংলার শিক্ষক ও বিভাগীয় প্রধান। মজিবর রহমান বিশ্বাস স্যারের স্ত্রী (নাম মনে নেই) বাংলা পড়াবেন বলে কলেজে যাওয়া-আসা করেন। একদিন আমাকে জানালেন যে, বিশ্বাস স্যার কথা বলার জন্য বাসায় চায়ের দাওয়াত দিয়েছেন।
তখনও আমি ক্যাম্পাসেই থাকি। স্যারের বাসা আর আমার বাসার মাঝখানে কে. বি. ইসমাইল রোডের পাশে মাঝে একটি বিল্ডিং।
বাসায় এসে কথাটা আমার স্ত্রীর সাথে শেয়ার করি। তিনি বললেন, "বিশ্বাস স্যারের বাসায় যাবে! কিন্তু সাবধান! স্যার খুব রাগী মানুষ। কথাবার্তা খুব হিসাব করে বলবে।" আমি ভাবীর (স্যারের স্ত্রী) কথামত এক রাতে বাসায় হাজির হলাম। স্যারের সাথে প্রথম পরিচয়। কুশল বিনিময়ের পর চা-নাস্তা খেতে খেতে অনেক আলাপ। একটানা দেড় ঘন্টা।
বিদায় নিয়ে বাসায় আসলাম। এসে দেখি আমার স্ত্রী তো একেবারে অস্থির! সে ভেবেছে, এতক্ষণে হয়তো আমি গোলপাকিয়ে বসেছি।
তার কথায় আমি উল্টা অবাক হয়ে বললাম, "কই না তো? স্যার তো খুব শান্ত মানুষ। আমার সাথে খুব ভালো ব্যবহার করেছেন।"
যা হোক, একইভাবে স্যারের সাথে বেশ কয়েকবার উঠাবসা হয়েছে। স্যার আমাকে ছোট ভাইয়ের মতোই স্নেহ করতেন। বিদেশে পানি উন্নয়ন বিষয়ক সেমিনারের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করতেন। পথেঘাটে যেখানেই দেখা হতো গাড়ি থামিয়ে কথা বলতেন। স্যার ও আমার গন্তব্য পথ একই হলে স্যার গাড়ি থামিয়ে আমাকে উঠিয়ে নিতেন।
স্যারের ছোট ভাইয়ের বউ আমার কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারের ছাত্রী ছিলেন। তিনি এখনও কেওয়াটখালী থাকেন।
এইতো কয়েক মাস আগে শহর থেকে আসার পথে অটোতে আমার ঐ ছাত্রীর সাথে দেখা ও কথা হয়। তার মাধ্যমে স্যারের অবস্থান সম্পর্কে অবগত হয়েছিলাম।
অবশেষে স্যারের আত্মার শান্তি কামনা করে ইতি টানছি।
চমৎকার লিখেছেন।
স্যার এর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। মহান আল্লাহ উনাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুন, আমীন।
ধন্যবাদ স্যার। আমরা বিশ্বাস স্যারকে কখনো দেখিনি, কিন্তু আপনার লেখার মাধ্যমে কিছুটা হলেও স্যারকে জানতে পারলাম। আল্লাহ তাআলা উনাকে জান্নাতবাসী করুন।
খুব ভালো লাগলো। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা স্যারের সকল গোনাহ ক্ষমা করে জান্নাতবাসী করুন এবং পরিবারের সদস্যদের ধৈর্য্য ধারণ করার তৌফিক দান করুন আমিন
প্রফেসর ডঃ মোঃ সাইদুর রহমানের প্রানবন্ত স্মৃতিচারণ আমি পড়েছি এবং বেশ ভালো লেগেছে, সে খুব লাকী বলা যায় মুজিবর স্যারকে সে কাছ থেকে দেকেছে, আমাদের ইচ্ছা থাকলেও স্যারের কাছে যেতে কখনো সাহসে কুলোয় নি, মহান আল্লাহ্ স্যারকে বেহেশত্ নছীব করুন, আমীন।
চাচার কথা মনে পড়ে এখনো। খুব ভাল মনের মানুষ ছিলেন। অাল্লাহ্ পাক উনাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন।
sar er nam shunesi dekhesi kintu kokhono class a paini... jehetu ami ag engineering er student tai tar class pawar kotha cilo kintu kopal kharap both hoy.... may allah grant him jannat...
Excellent description sir which helps us to portrait the personality of Mujabur Rahman sir. Heartiest respect and praying to Allah for his departed soul.
আল্লাহ পাক স্যারকে জান্নাতবাসী করুন। আপনার লেখাটি অনেক সুন্দর হয়েছে স্যার।
পরপারে ভালো থাকুন শ্রদ্ধেয় বিশ্বাস স্যার।
আপনার স্নেহের পরশ বারবার আমার সামনে হাজির হয়।
Sir, thank you very much for the commemoration. I' ve got Monjur Murshed Sir and Satter Mondal Sir as my class teacher. Most of the time I referred Monjur Murshed Sir for his very modest and solemnity in appearance. Honestly speaking and I've no confussion to acknowledge that in my life have many good stories linking you. May be I'll write that commemoration in future. I don't know whose demise will happen earlier. I wish you a long pious life.
Thank you once again Sir.
Have a good time.
স্যারের সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়েছিল যখন পিএসসি’র সদস্য ছিলেন। স্যারের ব্যক্তিত্বের বিশলতা সরাসরি অবলোকন করেছি। আল্লাহ উনাকে জান্নাত দান করুন।
ধন্যবাদ স্যার। আমরা বিশ্বাস স্যারকে কখনো দেখিনি, কিন্তু আপনার লেখার মাধ্যমে কিছুটা হলেও স্যারকে জানতে পারলাম। আল্লাহ তাআলা উনাকে জান্নাতবাসী করুন।
স্ক্রপ ডাইভারসিফিকেশন প্রকল্পে গবেষণা করার সুবাদে আমি স্যারকে কিছুটা জেনেছিলাম। আমার ধারনায় উনি অনেক বড় মাপের মানুষ ছিলেন। আল্লাহ স্যারকে বেহস্ত নসীব করে দিন।
Very informative post about our respected Sir. The comments are also enriched with diversified information about Biswas Sir. I was fortunate enough to learn with Sir for one year. The subject was On farm water management. Teaching technique was fully applied basis, field oriented and completely different with others. It was a great challenge for us to present a project in front of Great Sir and as well as other classmates. We felt that Biswas Sir’s thought was always one step away from his time. May his departed soul Rest in Peace.
ধন্যবাদ স্যার সম্পর্কে বিস্তারিত লেখার জন্য। স্যার আমার ফাইল ইয়ারের গাইড ছিলেন। স্যারের বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরীর পর পিএসসির সদস্য হবার পর অনেক বার দেখা হয়েছে এবং অনেক বিষয়ে কথা হয়েছে। হ্যাঁ, স্যার অন্যদের তুলনায় একটু ভিন্ন ধরনের বা ভিন্ন মাত্রার ছিলেন। তা বলে শেষ করা যাবে না। স্যারের বিদেহীআত্মার শান্তি কামনা করি। মহান আল্লাহ্ তালা যেন তাঁকে বেহেস্ত নসিব করেন।
আমাদের সময়ের শিক্ষকগন ছিলেন পিতার মতো। দু একজন বাদ দিলে প্রফেসরদের সম্মান দেয়ার মত ভাষা আমার জানা নেই।
জনাব, আমি বিশ্বাস সারের ছাত্র, ১৯৯০ এ ক্যাম্পাস ছেড়েছি, আপনি সে সময়ের যে স্যারদের স্মৃতিচারন করেছেন তাঁরা সবাই আমাদের সময়ের বিশেষ ব্যক্তিত্ব, আমাকে স্মৃতিকাতর করেছে, এমন একটি আলোচনার জন্যে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
স্যারের সাথে আমার খুবই ঘনিষ্ঠ সর্ম্পক ছিল । আমার নামের শেষে যেহেতু সরকার, তাই তিনি আমাকে সরকার না বলে Govt. বলে ডাকতেন । Reseach নিয়ে স্যারের সাথে আমার অনেক আলোচনা হতো । যা হোক স্যার চলে গেছেন, তার জন্য আমরা দোয়া করি । আপনার সুন্দর লেখার জন্য ধন্যবাদ ।
তোমার লেখা পড়লাম যার মধ্যে অনেক শিক্ষনীয় ম্যাসেজ আছে। সুন্দর লেখো। শভ কামনা।
Dr. Md. Saidur Rahman, a Full Professor of Agricultural Economics and Director of IADS at Bangladesh Agricultural University (BAU).